Ration Card Benefits: কোন রঙের রেশন কার্ডধারীরা সবচেয়ে বেশি সুবিধা পান? কারা এর জন্য আবেদন করতে পারবেন

Published on:

Follow Us

Ration Card Benefits: ভারত সরকার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার লক্ষ্যে অনেক কল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এই উদ্যোগগুলি অভাবী মানুষদের আর্থিক সহায়তা এবং বিভিন্ন ধরণের সহায়তা প্রদান করে। এরকম একটি উদ্যোগ হল জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন (NFSA), যা যোগ্য ব্যক্তিদের জন্য ভর্তুকিযুক্ত বা এমনকি বিনামূল্যে খাদ্যশস্যের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করে। এই সুবিধাগুলি পেতে, ব্যক্তিদের অবশ্যই একটি রেশন কার্ড থাকতে হবে, যা এই পরিষেবাগুলির জন্য যোগ্যতা এবং বৈধ পরিচয় প্রমাণ উভয়ই হিসেবে কাজ করে।

রেশন কার্ড কী?

Ration Card Benefits
Ration Card Benefits

রেশন কার্ড হল সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার কর্তৃক জারি করা একটি সরকারী নথি। এই কার্ডের সাহায্যে, যোগ্য পরিবারগুলি জাতীয় খাদ্য ও নিরাপত্তা আইন (NFSA), ২০১৩ অনুসারে ভর্তুকিযুক্ত হারে খাদ্যশস্য কিনতে পারবে। এর আগে, যোগ্য পরিবারগুলি লক্ষ্যযুক্ত গণবিতরণ ব্যবস্থার (TPDS) মাধ্যমে ভর্তুকিযুক্ত হারে খাদ্যশস্য কিনতে পারত। জনগণকে সাশ্রয়ী মূল্যে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ এবং মানের খাবার সরবরাহ করার জন্য ২০১৩ সালে জাতীয় খাদ্য ও নিরাপত্তা আইন (NFSA) পাস করা হয়েছিল। সবাইকে একই রেশন কার্ড দেওয়া হয় না। এটি লোকেদের তাদের আর্থিক অবস্থা অনুসারে দেওয়া হয়, যা নির্ধারণ করে যে কোন লোকের সরকারি রেশনে ভর্তুকি প্রয়োজন এবং কোন লোকের নয়।

রেশন কার্ডের প্রকারভেদ: 

রেশন কার্ড এখনও দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি। এটি কেবল ভর্তুকিযুক্ত রেশন পাওয়ার একটি মাধ্যমই নয়, বরং অনেক সরকারি প্রকল্পের সুবিধাও রেশন কার্ড ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সরকার চারটি ভিন্ন ধরণের রেশন কার্ড জারি করে, যার প্রতিটিতে বিভিন্ন রঙে কোড করা থাকে যা এর সুবিধাগুলি নির্দেশ করে। এই কার্ডগুলিতে বিভিন্ন স্তরের সহায়তা পাওয়া যায় এবং রেশন কার্ডের রঙ এর সাথে সংযুক্ত সুবিধার পরিধি নির্দেশ করে।

গোলাপী বা লাল রেশন কার্ড: 

এই কার্ডটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দারিদ্র্যসীমার উপরে থাকা পরিবারগুলিকে, অর্থাৎ APL (দারিদ্র্যসীমার উপরে) দেওয়া হয়। এই রেশন কার্ডের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি স্বাভাবিক দামে শস্য কিনতে পারবেন। এছাড়াও, এই কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকিও দেওয়া হয়। এই কার্ডের মাধ্যমে উজ্জ্বলা যোজনা এবং আবাসন প্রকল্পের সুবিধাও নেওয়া যেতে পারে।

হলুদ রেশন কার্ড: 

এই রেশন কার্ডটি দারিদ্র্যসীমার নীচে অর্থাৎ বিপিএল (দারিদ্র্যসীমার নীচে) থাকা লোকদের জন্য জারি করা হয়। এই কার্ডের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ভর্তুকিযুক্ত হারে গম, চাল, ডাল, চিনি এবং কেরোসিন কিনতে পারবেন। যেকোনো সরকারি প্রকল্পে এই রেশন কার্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

সাদা রেশন কার্ড:

এই কার্ডটি আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের দেওয়া হয় যারা খাদ্যশস্যের জন্য সরকারি প্রকল্পের উপর নির্ভরশীল নন। এই কার্ডটি সাধারণত ঠিকানার প্রমাণ বা পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই কার্ডের মাধ্যমে কিছু সরকারি প্রকল্পের সুবিধাও পাওয়া যাবে।

নীল বা কমলা রেশন কার্ড: 

এই রেশন কার্ডটি অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের জন্য জারি করা হয় যারা বিপিএল বিভাগের আওতায় পড়ে না। এই মানুষরা স্বাভাবিকের চেয়ে কম দামে গম, চাল এবং কেরোসিনের মতো খাদ্যশস্য কিনতে পারেন। কিছু রাজ্যে এই রেশন কার্ডগুলি জল এবং বিদ্যুৎ বিলের উপরও ছাড় দেয়।

এই কার্ড থেকে আপনি সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন?

দেশের মানুষ তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী (BPL) মানুষদের হলুদ রেশন কার্ড দেওয়া হয়। হলুদ রেশন কার্ডধারী পরিবারগুলিকে সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। সরকার হলুদ রেশন কার্ডে কম দামে প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করে। এছাড়াও, তারা গম, চাল, চিনি, তেল এবং ডালের উপর ভর্তুকি পায়। শুধু তাই নয়, উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় বিপিএল কার্ডধারীদের বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগও দেওয়া হয়। অনেক সরকারি প্রকল্পে বিপিএল রেশন কার্ডধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

ITR Refund: ITR-1 এবং ITR-2 এর মধ্যে পার্থক্য কী? কোনটি আপনার জন্য উপকারী?

বিপিএল রেশন কার্ডের জন্য কীভাবে আবেদন করবেন?

শুধুমাত্র যোগ্য পরিবারগুলি যাতে সুবিধাগুলি পান তা নিশ্চিত করার জন্য BPL রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত থাকে:

– আবেদনপত্র সংগ্রহ করুন: স্থানীয় রেশন অফিসে পাওয়া যাবে অথবা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে।

– বিস্তারিত তথ্য পূরণ করুন: পারিবারিক আয়, পরিবারের সদস্য সংখ্যা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিবরণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করুন।

– সহায়ক নথি সংযুক্ত করুন: বসবাসের প্রমাণপত্র, আয়ের শংসাপত্র, পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট আকারের ছবি অন্তর্ভুক্ত করুন।

– আবেদন জমা দিন: পূরণ করা ফর্ম এবং নথিপত্র স্থানীয় রেশন অফিসে জমা দিন।

– যাচাইকরণ প্রক্রিয়া: কর্মকর্তারা একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাইকরণ পরিচালনা করবেন, যার মধ্যে আবেদনকারীর বাসভবন পরিদর্শন করা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

– রেশন কার্ড প্রদান: সফল যাচাইয়ের পর রেশন কার্ড প্রদান করা হবে।

বিপিএল কার্ডের যোগ্যতা

বিপিএল পাওয়ার যোগ্যতার মানদণ্ড নিম্নরূপ –

  1. আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতের নাগরিক হতে হবে এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক বছর ধরে দেশে বসবাস করতে হবে।
  2. যদি গ্রামাঞ্চলে পরিবারের আয় ৬,৪০০/- টাকার কম এবং শহরাঞ্চলে ১১,৮৫০/- টাকার কম হয়, তাহলে তা বিপিএল বিভাগের আওতায় পড়বে।
  3. পরিবারের কোনও সদস্যেরই দুই হেক্টর বৃষ্টিনির্ভর বা আধা-সেচযুক্ত জমি থাকা উচিত নয়।
  4. পরিবারের কোনও ধরণের চার চাকার গাড়ি থাকা উচিত নয়।
  5. পরিবারে কোনও আবাসিক ফোন থাকা উচিত নয়।

বিপিএল কার্ড পাওয়ার আগে কিছু যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। যদি কেউ নিয়ম মেনে না নিয়ে এটি করে, তাহলে ধরা পড়লে কর্তৃপক্ষ তাদের কঠোর শাস্তি দেবে। বিপিএল কার্ডের অযোগ্যতার মানদণ্ডের তালিকা এখানে দেওয়া হল:

  1. প্রার্থীকে আয়কর প্রদানকারী হলে চলবে না।
  2. কোনও ধরণের সরকারি কর্মচারীর অনুমতি নেই।
  3. সরকারি খাতের উদ্যোগ/বোর্ড/কোম্পানির কর্মচারী।
  4. স্বায়ত্তশাসিত বোর্ড/সংস্থার কর্মচারী।

মনে রাখবেন, এই গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড রয়েছে যা অতিক্রম করতে হবে। যদি কোনও প্রার্থী এইগুলির যে কোনও একটিতে পড়েন, তাহলে নিশ্চিত যে তার সারা জীবনে কখনও বিপিএল কার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।