Saving Account Rule: আজকের ডিজিটাল যুগে, একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রত্যেক ব্যক্তিরই কমপক্ষে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকে, আবার অনেকেরই একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকে বলেও দেখা যায়। চাকরি, ব্যবসা, সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের মতো বিভিন্ন প্রয়োজনের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা সাধারণ। সম্প্রতি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তিদের জন্য একটি সতর্কতা জারি করেছে। অতএব, একজন ব্যক্তি কতগুলি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রাখতে পারবেন এবং এর নিয়ম কী তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।
একজন ব্যক্তির কতগুলি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে?
রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) এর নিয়ম অনুসারে, একজন ব্যক্তির কতগুলি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে তার কোনও নির্দিষ্ট সীমা নেই। আরবিআই ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যার উপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করেনি, যার অর্থ আপনি আপনার চাহিদা এবং সুবিধা অনুসারে যত খুশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। তবুও, একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা পরিচালনা করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। অতএব, আপনার সমস্ত অ্যাকাউন্ট দক্ষতার সাথে পরিচালনা করা এবং তাদের নিয়মগুলি অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
বিভিন্ন ধরণের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আপনি খুলতে পারেন
ব্যাংকগুলি গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরণের অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা প্রদান করে, যা আপনি আপনার নির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন। সবচেয়ে সাধারণ ধরণের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হল একটি সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট, যেখানে আপনি জমাকৃত পরিমাণের উপর সুদও পান। এটি সাধারণত একটি প্রাথমিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, যা দৈনন্দিন লেনদেন, বিল পরিশোধ এবং সঞ্চয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে একটি নির্দিষ্ট ন্যূনতম ব্যালেন্স বজায় রাখতে হয়, যা ব্যাংক ভেদে ভিন্ন হয়।
ব্যবসা এবং বেতনভোগী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
ব্যবসায়িক প্রয়োজনে, একটি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট একটি উপযুক্ত বিকল্প। এই অ্যাকাউন্টটি বিশেষভাবে এমন লোকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে যাদের উচ্চ পরিমাণে লেনদেন হয় বা যারা ট্রেডিং করেন। চলতি হিসাব সুদ প্রদান করে না কিন্তু লেনদেনের সংখ্যার উপর কোন বিধিনিষেধ নেই। একই সময়ে, বেতনভোগীদের জন্য, বেতন অ্যাকাউন্ট হল একটি বিশেষ ধরণের সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট, যার জন্য সাধারণত কোনও ন্যূনতম ব্যালেন্সের প্রয়োজন হয় না। এটি একটি শূন্য ব্যালেন্স অ্যাকাউন্ট, যেখানে প্রতি মাসে আপনার বেতন জমা হয়।
জয়েন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

যখন দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একসাথে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে চান, তখন একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট একটি ভালো বিকল্প। এই ধরণের অ্যাকাউন্ট সাধারণত স্বামী/স্ত্রী, পরিবারের সদস্য, ব্যবসায়িক অংশীদার বা বন্ধুদের মধ্যে খোলা হয়। একটি যৌথ অ্যাকাউন্টে, সমস্ত অ্যাকাউন্টধারীদের অ্যাকাউন্টের উপর সমান অধিকার থাকে এবং সমস্ত লেনদেনের জন্য তারা দায়ী থাকে। এই অ্যাকাউন্টটি বিশেষ করে সেইসব পরিবারের জন্য কার্যকর যেখানে আর্থিক দায়িত্ব ভাগাভাগি করা হয় অথবা যেখানে একাধিক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে অ্যাক্সেসের প্রয়োজন হয়।
একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার সুবিধা
একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার অনেক সুবিধা থাকতে পারে। বিভিন্ন আর্থিক উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট কার্যকর হতে পারে, যেমন একটি অ্যাকাউন্ট দৈনন্দিন খরচের জন্য, আরেকটি সঞ্চয়ের জন্য এবং তৃতীয়টি বিনিয়োগের জন্য। এটি আপনার আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে সহজ করে তোলে এবং আপনি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে আপনার অর্থ রাখতে পারেন। তাছাড়া, বিভিন্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকার ফলে আপনি সেই ব্যাংকগুলির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধাগুলি উপভোগ করার সুযোগ পান, যেমন বিভিন্ন সুদের হার, বিভিন্ন ব্যাংকিং সুবিধা এবং বিভিন্ন ক্রেডিট কার্ড অফার।
Ayushman Card: বিনামূল্যে হবে চিকিৎসা! মোদীর এই প্রকল্পের সুযোগ পাবেন কি?
একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকার অসুবিধা এবং চ্যালেঞ্জ
তবে, একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার কিছু অসুবিধাও রয়েছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সব হিসাব পরিচালনা করা। প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য বিভিন্ন ন্যূনতম ব্যালেন্সের প্রয়োজনীয়তা, এটিএম কার্ড, চেকবই এবং পাসওয়ার্ড মনে রাখা কঠিন হতে পারে। এছাড়াও, প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য বিভিন্ন ফি এবং চার্জ দিতে হয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, একাধিক অ্যাকাউন্টে টাকা ছড়িয়ে থাকলে আপনার সুদের আয় কমে যেতে পারে, কারণ বেশি পরিমাণে সুদ বেশি পাওয়া যায়।
একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার সময় যে বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত
আপনার যদি একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা উচিত। প্রথমত, অপ্রয়োজনীয় চার্জ এড়াতে আপনার সমস্ত অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স বজায় রাখুন। দ্বিতীয়ত, নিয়মিতভাবে আপনার সমস্ত অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করুন এবং লেনদেন পর্যবেক্ষণ করুন, যাতে কোনও অননুমোদিত কার্যকলাপ সনাক্ত করা যায়। তৃতীয়ত, সমস্ত অ্যাকাউন্টের বিবরণ এবং পাসওয়ার্ড নিরাপদ রাখুন এবং নিয়মিত আপডেট করুন। চতুর্থত, আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিকে আপনার প্যান কার্ডের সাথে লিঙ্ক করুন, যাতে আয়কর বিভাগের কোনও সমস্যা না হয়।