এক্স (আগের টুইটার)-এ সাইবার অ্যাটাক! সোমবার সারাদিন ধরেই সমস্যা চলছিল। বিঘ্ন ঘটেছিল পরিষেবায়। এর কারণ হিসেবে এবার সাইবার হামলাকে দায়ী করলেন ইলন মাস্ক। তাঁর দাবি, ইউক্রেন থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে। তবে “ডার্ক স্টর্ম” নামে প্যালেস্টাইনপন্থী হ্যাকার গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে।
সোমবার বিশ্বজুড়ে বসে গিয়েছিল এক্স। বারবার ক্র্যাশ করে যাচ্ছিল সাইট। অ্যাপেও একই অবস্থা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেন, “এটা বড়সড় সাইবার হামলা।“তাঁর মতে, ইউক্রেনের আইপি অ্যাড্রেস থেকে আক্রমণ চালানো হয়েছে, পুরো নেটওয়ার্ক বসে গিয়েছিল।
তবে ডার্ক স্টর্ম দাবি করেছে যে তারা হামাসের সমর্থনে এক্স-এর সার্ভারে হামলা চালিয়েছিল। এর আগে ইজরায়েল-হামাস সংঘাতের সময়ও তারা বিভিন্ন দেশে সাইবার আক্রমণ করে। সেই সময়ও বেশ কিছু সাইট ক্র্যাশ করে যায়।
সোমবার দফায় দফায় ক্র্যাশ করে এক্স। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ডেভেলপাররা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করে এক্স-কে সচল করেন। কিন্তু বেশিক্ষণ টেকেনি। কিছুক্ষণের মধ্যে ফের ক্র্যাশ করে। মাস্ক জানান, এর আগেও এক্সে সাইবার হামলা হয়েছে। কিন্তু এবারের ঘটনা আরও বেশি সংগঠিত এবং শক্তিশালী। হামলার সঙ্গে কোনও দেশ বা শক্তিশালী গোষ্ঠী যুক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন তিনি।
আরো পড়ুন: প্রকাশ্যে CIBIL Score সম্পর্কিত বড় তথ্য, এভাবে করা হয় গণনা, ঋণ পাওয়া হল আরো সহজ!
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা অবশ্য ইলন মাস্কের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের মতে, ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল-অফ-সার্ভিস (DDoS) হামলা চালাতে কোনও রাষ্ট্রীয় সংস্থার প্রয়োজন হয় না, যে কোনও স্বাধীন হ্যাকার গ্রুপই এই কাজ করতে পারে। রয়টার্স-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার ইউটিসি সময় সকাল ৯:৪৫ থেকে একাধিক DDoS হামলা হয় এক্সে। বিশ্বজুড়ে সমস্যায় পড়েন ইউজাররা।
ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ডাউনডিটেক্টর জানিয়েছে, সোমবার সকাল ১০টা (ইটি) নাগাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩৯,০০০ ব্যবহারকারী এক্স ব্যবহার করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। দিনের শেষে এই সংখ্যা কমে প্রায় ১,৫০০-এ নেমে আসে।
মাস্কের এই বক্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতির রঙ লেগেছে। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কট্টর সমালোচক। কিছুদিন আগেই ওভাল অফিসে রীতিমতো বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন ট্রাম্প এবং জেলেনস্ক। তারপর থেকেই ওয়াশিংটন ও কিয়েভের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে।
এদিকে, মাস্ক এখন মার্কিন সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের প্রধান। যা বিভিন্ন দেশে অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই আবহে এক্স বিভ্রাটের ঘটনায় তাঁর বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কে নতুন মোড় আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।