Bizarre: বার্ষিক ৩০ কোটি টাকা বেতন, কোনও বস নেই এবং কেবল আলো জ্বালানোর কাজ – এটি স্বপ্নের মতো শোনাচ্ছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, এই দুর্দান্ত প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও, কেউ এই কাজটি করতে প্রস্তুত নয়। আসলে, এই কাজটি মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া বন্দরের কাছে ফারোস দ্বীপে অবস্থিত ফারোস বাতিঘরের একজন বাতিঘর রক্ষকের। কিন্তু এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলির মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাহলে আসুন, জেনে নেওয়া যাক কেন এত মোটা বেতনের পরেও মানুষ এই চাকরি থেকে দূরে সরে যায়?
ফ্যারোস বাতিঘর, যা আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর নামেও পরিচিত। এটি খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল বিপজ্জনক পাথর এড়িয়ে জাহাজগুলিকে আলেকজান্দ্রিয়ার ব্যস্ত বন্দরে নিয়ে যাওয়া। এমন পরিস্থিতিতে, বাতিঘর রক্ষকের প্রধান কাজ হল সর্বদা আলো জ্বালানো, যাতে জাহাজগুলি পাথরের সাথে সংঘর্ষ না করে। এই কাজটি শুনতে সহজ মনে হলেও এর সাথে আসা অসুবিধাগুলি এটিকে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং করে তোলে।
ফ্যারোস লাইটহাউস কাজের চ্যালেঞ্জগুলি

ফ্যারোস বাতিঘরটি মানব বসতি থেকে কয়েক মাইল দূরে ফ্যারোস দ্বীপে সমুদ্রের মাঝখানে অবস্থিত। তাই বাতিঘর রক্ষককে মাসের পর মাস একা থাকতে হয়। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। সামাজিক যোগাযোগের অভাব, বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের কাছ থেকে দূরত্ব এবং শূন্যতা এটিকে মানসিকভাবে ক্লান্তিকর করে তোলে। এছাড়াও, বাতিঘরটি সমুদ্রের মাঝখানে অবস্থিত হওয়ার কারণে, রক্ষককে বারবার তীব্র ঝড়ের মুখোমুখি হতে হয়। যার কারণে রক্ষকের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই কাজে কোনও সহকর্মী নেই এবং তাৎক্ষণিক সহায়তাও নেই। রক্ষককে নিজেই আলোর যত্ন নিতে হবে। উপরন্তু, বাতিঘরটি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। এটি শারীরিকভাবে ক্লান্তিকর এবং মানসিকভাবে চাপযুক্ত।
যদিও আজকের সময়ে টাকা খুবই প্রয়োজনীয় একটি সম্পদ। ৩০ কোটি টাকা বেতন আকর্ষণীয় হতে পারে, কিন্তু মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই নয়। আজকের পৃথিবীতে, মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া, বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে সংযুক্ত থাকতে ভালোবাসে। কিন্তু এই চাকরি আপনাকে এই সব থেকে দূরে নিয়ে যাবে। এছাড়াও, ঝড় এবং সমুদ্রের ঢেউয়ের মুখোমুখি হওয়ার ভয় মানুষকে এই কাজ থেকে দূরে রাখে।